সেপ্টেম্বর ৯, ২০২৫, ০১:৪১ পিএম
নেপালে চলমান সহিংস বিক্ষোভের জন্য প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি বিভিন্ন 'স্বার্থান্বেষী মহলকে' দায়ী করেছেন। সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষে ১৯ জন নিহত ও শতাধিক আহতের ঘটনায় তিনি গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক শেষে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।অলি বলেন, "আন্দোলনের নামে ভাঙচুর, নৈরাজ্য, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালানো হচ্ছে। আমরা দেখছি যে, আন্দোলনের সংগঠকরা বারবার তাদের কর্মসূচি সফল ঘোষণা করে লোকজনকে ঘরে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানালেও সহিংসতা কমছে না।
বিক্ষোভের কারণ
গত বছর নেপালের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সরকার দেশে সক্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোকে নিবন্ধনের জন্য সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল। নির্ধারিত সময়ে নিবন্ধন না করায় গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকে ফেসবুক, এক্স, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউবসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং তরুণ প্রজন্ম বিক্ষোভ শুরু করে।
পরিস্থিতির অবনতি
প্রাথমিকভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ ধীরে ধীরে সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয়। সোমবার রাজধানী কাঠমান্ডুর বাণেশ্বরসহ বিভিন্ন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে ১৯ জন নিহত এবং শতাধিক আহত হন। বিক্ষোভকারীদের দাবির মুখে সোমবার নেপালের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক পদত্যাগ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলিরও পদত্যাগের দাবি ওঠা শুরু হয়েছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সোমবার রাতে মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডেকেছিলেন অলি। সেই বৈঠকে ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাপের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের শান্ত হওয়ারও আহ্বান জানানো হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য
টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভাষণে অলি বলেন, "সরকার কখনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিরুদ্ধে ছিল না, এখনও নেই। আমরা শুধু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোকে নেপালের আইন ও সার্বভৌমত্ব মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছিলাম।" তবে নেপালি ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্য অনুযায়ী, সরকারের পদক্ষেপ সত্ত্বেও বিক্ষোভ শান্ত হওয়ার পরিবর্তে কাঠমান্ডুর বাইরেও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।